এবারের জন্মদিনটা একটু অন্যরকম আমার জীবনে।
প্রথমত আমার ছেলে আমাকে এই নীল শাড়িটা চুপিচুপি কিনে আমাকে আগের রাতে সারপ্রাইজ দিয়েছে। দ্বিতীয়ত কৃষ্ণকলি সুন্দর একটা কেক কিনে এনেছে। ঘর সাজিয়েছে।
তৃতীয়ত আমি এক মাকে পেয়েছি।
এই মা আমার বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন।
আমার মায়ের নাম “বিজয়া” এনার নামও “বিজয়া” শুনেই মনটা সেদিন মা মা করে উঠেছিল।
মায়ের মতোই ছোটখাটো।
ওনাকে তখনই বলেছিলাম তুমি তো একেবারে অনেকটা আমার মায়ের মতো। উনিও খুব খুশি হয়েছিলেন। বলেছিলেন আমি একটা মেয়ে পেলাম তাহলে
তারপর ওনার শরীর অসুস্থ হওয়ার জন্য রান্নার কাজটা ছেড়ে দিয়েছিলেন উনি।
কিন্তু আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করত।
মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসত গরম সিঙাড়া চপ মিষ্টি নিয়ে। বলতেন_ এই যে মেয়ের জন্য এনেছি। খাও এখুনি খাও।
এখন উনি আমার জায়ের ঘরে বাসন মাজার কাজ করেন।
ওদের কাছে শুনে উনি নিজেই এবারের জন্মদিনে সন্ধ্যায় এলেন।
আমি তাকে জানাইনি।
কিন্তু তাকে হঠাৎ দেখে আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছি।
আমার জন্য এক প্যাকেট মিষ্টি; আবার খুব সুন্দর একটা হার দুলের সেট এনেছেন
আমি খুব উচ্ছ্বসিত আনন্দে ঐ হারটা তখুনি পড়লাম।
তখনো পায়েস হয়নি। উনি বললেন _আমি করে দিচ্ছি পায়েস। মেয়ের জন্মদিন!
পায়েস তৈরি হল।
হঠাৎ একটা প্লেটে কিছুটা পায়েস নিয়ে চামচে করে আমাকে খাওয়াতে এলেন।
বললেন _ আমি তো মা। পায়েসটা নিজের হাতেই খাওয়াই।
আমার চোখে আনন্দে জল চলে এল।
এবারের জন্মদিনে সন্ধ্যায় আমি যেন মাকেই ফিরে পেলাম।
ওনার হাতটা আমার মাথায় দিয়ে বললাম _মা , মেয়েকে আশীর্বাদ করো।
মায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম।
উনি পাটা সরিয়ে নিতে চাইলেন। বললাম _তুমি আমার মা, প্রণাম করতে দাও।
মনে হল আমার মা আবার ফিরে এসেছে!
Leave a Reply